১- ঘুম থেকে জেগে উঠার সময়ের যিকিরসমূহ
১-(১) হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তাঁরই নিকট সকলের পুনরুত্থান।(২)
-------------
(২) বুখারী ফাতহুল বারী ১১/১১৩, হাদীস নং ৬৩১৪; সহীহ মুসলিম ৪/২০৮৩, হাদীস নং ২৭১১।
২- একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁরই; আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্র। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সুউচ্চ সুমহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই। হে রব্ব ! আমাকে ক্ষমা করুন। (১)
----------------------
(১) যে ব্যক্তি তা বলবে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। যদি সে দো‘আ করে, তবে তার দো‘আ কবুল হবে। যদি সে উঠে ওযু করে নামায পড়ে, তবে তার সালাত কবুল করা হবে। সহীহ বুখারী: ফাতহুল বারী, ৩/৩৯, হাদীস নং ১১৫৪। হাদীসের ভাষ্য ইবন মাজাহ-এর অনুরূপ। দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ ২/৩৩৫।
৩- (৩) সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার দেহকে নিরাপদ করেছেন, আমার রূহকে আমার নিকট ফেরত দিয়েছেন এবং আমাকে তাঁর যিকির করার অনুমতি (সুযোগ) দিয়েছেন। (২)
--------------------
(২) তিরমিযী ৫/৪৭৩, হাদীস নং ৩৪০১। দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৪৪।
৪-(৪) নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে নিদর্শনাবলী রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্য। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহর স্মরণ করে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে, আর বলে, ‘হে আমাদের রব! আপনি এগুলো অনর্থক সৃষ্টি করেননি, আপনি অত্যন্ত পবিত্র, অতএব আপনি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।’ ‘হে আমাদের রব! আপনি কাউকেও আগুনে নিক্ষেপ করলে তাকে তো আপনি নিশ্চয়ই হেয় করলেন এবং যালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই।’ ‘হে আমাদের রব, আমরা এক আহ্বায়ককে ঈমানের দিকে আহ্বান করতে শুনেছি, ‘তোমরা তোমাদের রবের উপর ঈমান আন।’ কাজেই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব! আপনি আমাদের পাপরাশি ক্ষমা করুন, আমাদের মন্দ কাজগুলো দূরীভূত করুন এবং আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের সহগামী করে মৃত্যু দিন। ‘হে আমাদের রব! আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদেরকে যা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আমাদেরকে দান করুন এবং কেয়ামতের দিন আমাদেরকে হেয় করবেন না। নিশ্চয় আপনি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।’ তারপর তাদের রব তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বলেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের মধ্যে আমলকারী কোনো নর বা নারীর আমল বিফল করি না; তোমরা একে অপরের অংশ। কাজেই যারা হিজরত করেছে, নিজ ঘর থেকে উৎখাত হয়েছে, আমার পথে নির্যাতিত হয়েছে এবং যুদ্ধ করেছে ও নিহত হয়েছে আমি তাদের পাপ কাজগুলো অবশ্যই দূর করব এবং অবশ্যই তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। এটা আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার; আর উত্তম পুরস্কার আল্লাহরই কাছে রয়েছে। যারা কুফরী করেছে, দেশে দেশে তাদের অবাধ বিচরণ যেন কিছুতেই আপনাকে বিভ্রান্ত না করে। এ তো স্বল্পকালীন ভোগ মাত্র; তারপর জাহান্নাম তাদের আবাস; আর ওটা কত নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল! কিন্তু যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আতিথেয়তা; আর আল্লাহর কাছে যা আছে তা সৎকর্মপরায়ণদের জন্য উত্তম। আর নিশ্চয় কিতাবীদের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা আল্লাহর প্রতি বিনয়াবনত হয়ে তাঁর প্রতি এবং তিনি যা তোমাদের ও তাদের প্রতি নাযিল করেছেন তাতে ঈমান আনে। তারা আল্লাহর আয়াত তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে না। তারাই, যাদের জন্য আল্লাহর কাছে পুরস্কার রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, ধৈর্যে প্রতিযোগিতা কর এবং সবসময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাক, আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।(১)
........................................
(১) সূরা আলে ইমরান ১৯০-২০০; বুখারী, ফাতহুল বারীসহ ৮/৩৩৭, হাদীস নং ৪৫৬৯; সহীহ মুসলিম ১/৫৩০, হাদীস নং ২৫৬।